

Mojaru

নুফরাত জেরীন
দুয়ারে কড়া নাড়ছে রহমত, বরকত, মাগফিরাতের মাস রমজান। মুসলিম মিল্লাতের জন্য এ মাস অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। রোজার মাসেই নাযিল হয়েছে মহাগ্রন্থ আল কোরআন। রমজান মাসের ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে :
“রমজান মাস এমন যে, তাতে কোরআন নাজিল করা হয়েছে; মানুষের জন্য পথপ্রদর্শকরূপে ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট বর্ণনা ও সত্যাসত্যের পার্থক্য নির্ণয়কারী হিসেবে।” (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)
 
রমজান মাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো কোরআন তেলাওয়াত। প্রতি বছর রমজান মাসে হযরত জিবরাইল (আ.) হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালামকে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন। আল্লাহর রাসূল (সা.) জীবনের শেষ রমজানে পুরো কোরআন দু'বার শুনিয়েছিলেন। এজন্য প্রত্যেক মুসলিমের উচিত রমজানে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
“তোমরা পবিত্র কোরআন পাঠ কর, নিশ্চয়ই তা তোমাদের জন্য কিয়ামতের ময়দানে সুপারিশ করবে।”
 
কোরআন পড়ি শুদ্ধ স্বরে
 
শুদ্ধ ভাবে কোরআন পাঠের নির্দেশ দিয়ে স্বয়ং আল্লাহ তা'য়ালা কোরআনে বলেছেন,
“ধীরে ধীরে স্পষ্টভাবে কুরআন তিলাওয়াত কর।” (সূরা মুয্যামমিল, আয়াত-৪)
 
সহীহ্ ভাবে কোরআন পাঠের অনেক ফযিলত রয়েছে। হযরত উসমান (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন,
“তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি সর্বোত্তম যে নিজে কোরআন শিখে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়।”
 
হাদীসে আরো বর্ণিত হয়েছে,
“সমস্ত ইবাদতের মধ্যে পবিত্র কোরআন শরীফ পাঠ করা সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত।”
 
অন্য হাদীসে বলা হয়েছে,
“যে ব্যক্তি পবিত্র কোরআন শরীফের একটি হরফ পড়বে সে ব্যক্তি দশটি নেকী পাবে।”
 
সহীহ্ ভাবে কোরআন পড়া যেমনি অত্যন্ত সওয়াবের কাজ ঠিক তেমনি অশুদ্ধ ভাবে কোরআন পাঠ গুণাহের কারণ। কেননা ভুল উচ্চারণে অনেক সময় কোরআনের মূল অর্থের পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। ভুল তেলাওয়াতের কারণে নামাজ অশুদ্ধ হতে পারে। তাই প্রত্যেক মুসলিমের উচিৎ শুদ্ধ ভাবে কোরআন মাজিদ শিক্ষা করা।
 
জিহ্বা সিক্ত থাকুক জিকিরে
 
আল্লাহর জিকির এমন এক শক্তি যা মানুষের জীবনের চলার পথকে মসৃণ করে দেয়। জিকিরকারী বান্দার হৃদয়ে আল্লাহ তা'য়ালা প্রশান্তি ঢেলে দেন। জিকিরের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ পাক কোরআনে বলেন,
“যখন তোমরা নামাজ সমাপ্ত করবে তখন দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহর জিকির (তাসবিহ-তাহলিল) পাঠ করবে।” (সূরা : নিসা, আয়াত- ১০৩)
 
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে :
 
“হে ঈমানদারগণ, তোমরা বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করো এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো।” (সূরা : আহযাব, আয়াত- ৪১)
 
“আল্লাহর অধিক জিকিরকারী পুরুষ ও জিকিরকারী নারী, তাদের জন্য আল্লাহর প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।” (সূরা আহযাব: আয়াত- ৩৫)
 
হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, “রাসূলুল্লাহ (সা.) সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকির করতেন।”
 
রমজানে যে কোনো আমলের সওয়াব অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। তাই রহমত-বরকত- নাজাতের এ মাসের জিকিরে ব্যস্ত থাকা প্রয়োজন।
 
দু'হাত তুলে রবকে ডাকি
বান্দা আল্লাহর দরবারে কোন কিছু চাইলে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অত্যন্ত খুশি হন এবং বান্দাকে ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। কোরআন ও হাদীসে দোয়া-মুনাজাতকে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ হিসেবে বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, “তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব।” (সূরা মু’মিন : আয়াত-৬০)
 
রাসূল (সা.) বলেন,
“যখন কোনো মুসলমান দোয়া করে, যদি তার দোয়ায় গুনাহের কাজ কিংবা সম্পর্কচ্ছেদের আবেদন না থাকে, তাহলে আল্লাহ তা'য়ালা তিনটি প্রতিদানের যেকোনো একটি অবশ্যই দান করেন। সঙ্গে সঙ্গে দোয়া কবুল করেন এবং তার কাঙ্ক্ষিত জিনিস দিয়ে দেন। দোয়ার কারণে কোনো অকল্যাণ বা বিপদ থেকে হেফাজত করেন অথবা আখিরাতের কল্যাণের জন্য তা জমা করে রাখেন।”
 
তাই প্রত্যেকের উচিত আল্লাহর দুয়ারে বেশি বেশি দোয়া করা। ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে আল্লাহ রোজাদার বান্দার দোয়া কবুল করে থাকেন। তাছাড়া রমজান মাসে রয়েছে মুসলমানদের জন্য সব চেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ রজনী লাইলাতুল কদর। সিয়াম সাধনার মাসে তাই বেশি করে দোয়া করা প্রয়োজন।
 
জানতে হবে মাসলা মাসায়েলও
ইসলাম কেবল একটি ধর্ম নয় বরং এটি একটি জীবন বিধান। তাই জীবনের প্রত্যেকটি দিকই ইসলামের অন্তর্ভুক্ত। দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটি বিষয়ও ইসলামের অন্তর্গত। তাই একজন মুসলিম হিসেবে যথাযথ দ্বীন পালনের লক্ষ্যে মাসলা মাসায়েল জানা গুরুত্বপূর্ণ। জ্ঞান অর্জনের বিষয়ে হাদীসে বলা হয়েছে :
“জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিম নর নারীর ওপর ফরজ।”
 
শেখার সময় এখনই
আসন্ন রমজানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্ত অভিজ্ঞ মেন্টরদের তত্ত্বাবধানে মজারু নিয়ে আসছে ঘরে বসে কোরআন শিখি কোর্স। শিশু, প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও প্রাপ্ত বয়স্ক নারীদের জন্য থাকছে পৃথক কোর্সের ব্যবস্থা। নারীদের কোর্সের পরিচালনায় থাকছে মহিলা মেন্টর। মাত্র ২৫ দিনে সহীহ কোরআন শেখার
এই কোর্সে থাকছে :
 
- ২৫ টি লাইভ ক্লাস
- ২৫ টি রেকর্ডেড ক্লাস
- সহিহ কোরআন পাঠ
- নামাজের দোয়া ও মুনাজাত
- দৈনন্দিন দোয়া ও জিকির
- নামাজ রোযার মাসলা-মাসায়েল।
এই রোজা থেকেই জীবন শুদ্ধ হোক, আলোকিত হোক কোরআনের আলোয়।